Swahili.Bible
Bible Society of Kenya
Bible Society of Kenya
Madaraka, Nairobi
PO Box 72983
Tel: 254 20602807
E-mail: info@biblesociety-kenya.org

10
মিসরের উপর অষ্টম আঘাত- পংগপালের উৎপাত
1-2এর পর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ফরৌণের কাছে যাও। আমি ফরৌণ ও তার কর্মচারীদের মন শক্ত করেছি যাতে তারা আমার এই সব ক্ষমতার চিহ্ন দেখতে পায় আর যাতে পরে তুমি তোমার ছেলেদের ও নাতিদের কাছে বলতে পার মিসরীয়দের আমি কিভাবে বোকা বানিয়েছি এবং আমার ক্ষমতার চিহ্ন দেখিয়েছি। এতে তোমরা বুঝতে পারবে যে, আমিই সদাপ্রভু।”
3মোশি ও হারোণ তখন ফরৌণের কাছে গিয়ে বললেন, “ইব্রীয়দের ঈশ্বর সদাপ্রভু বলছেন, ‘আর কতদিন তুমি আমার সামনে মাথা নোয়াতে অস্বীকার করবে? আমার উপাসনা করবার জন্য আমার লোকদের যেতে দাও। 4যদি তুমি আমার লোকদের যেতে দিতে রাজী না হও তবে কালকেই আমি তোমার দেশের মধ্যে পংগপাল নিয়ে আসব। 5সেগুলো এসে দেশটা এমনভাবে ঢেকে ফেলবে যে, মাটি পর্যন্ত দেখা যাবে না। শিলাবৃষ্টির হাত থেকে যা রেহাই পেয়েছে সেগুলো সব এই পংগপাল খেয়ে ফেলবে। মাঠে যে সব গাছপালা গজাচ্ছে সেগুলোও তারা খেয়ে ফেলবে। 6তারপর তোমার ও তোমার সব কর্মচারীদের এবং অন্যান্য সমস্ত মিসরীয়দের বাড়ী-ঘর এই সব পংগপালে ভরে যাবে। এই দেশে আসবার পর থেকে আজ পর্যন্ত তোমার বাপ-দাদারা এবং তাদের বাপ-দাদারাও কখনও এমন হতে দেখে নি।’ ” এই কথা বলবার পর মোশি পিছন ফিরে ফরৌণের কাছ থেকে চলে গেলেন।
7তখন ফরৌণের কর্মচারীরা তাঁকে বলল, “এই লোকটা আর কতদিন আমাদের ফাঁদ হয়ে থাকবে? ঐ লোকগুলো যেন তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপাসনা করতে পারে সেইজন্য তাদের যেতে দিন। আপনি কি বুঝতে পারছেন না যে, মিসর দেশটা একেবারে ধ্বংস হয়ে গেল? ”
8কাজেই মোশি ও হারোণকে আবার ফরৌণের কাছে নিয়ে আসা হল। ফরৌণ তাঁদের বললেন, “যাও, তোমরা গিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপাসনা কর। কিন্তু তোমাদের সংগে আর কারা যাবে? ”
9উত্তরে মোশি বললেন, “আমাদের শিশু ও বৃদ্ধ, আমাদের ছেলেমেয়ে এবং আমাদের গরু-ভেড়া সবই আমাদের সংগে যাবে, কারণ সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমাদের একটা উৎসব পালন করতে হবে।”
10তখন ফরৌণ তাঁদের বললেন, “যদি কখনও আমি ছেলেমেয়েদের নিয়ে তোমাদের যেতে দিই তবে তোমাদের ঐ সদাপ্রভুটাও যেন তোমাদের সংগে থাকে। সাবধান! তোমাদের উদ্দেশ্য ভাল নয়। 11না, তা হবে না। তোমরা তো সদাপ্রভুর উপাসনা করতে যেতে চাইছ, তবে কেবল পুরুষেরাই যাক।” এর পর ফরৌণের সামনে থেকে মোশি এবং হারোণকে তাড়িয়ে দেওয়া হল।
12পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “মিসর দেশের উপর তোমার হাত বাড়িয়ে দাও। তাতে মাঠের সবুজ সব কিছু, অর্থাৎ শিলাবৃষ্টি থেকে রেহাই পাওয়া সব কিছু পংগপাল এসে খেয়ে ফেলবে।”
13তখন মোশি মিসর দেশের উপরে তাঁর লাঠিটা বাড়িয়ে ধরলেন; আর সদাপ্রভু এমন করলেন যার দরুন সেই দেশের উপর সারা দিন ও সারা রাত ধরে পূবের বাতাস বইল। সকালবেলা সেই পূবের বাতাস ঝাঁকে ঝাঁকে পংগপাল নিয়ে আসল। 14এতে সারা মিসর দেশের উপর অসংখ্য পংগপাল এসে সব জায়গায় বসল। এত বেশী পংগপাল আগে আর কখনও দেখা যায় নি, কখনও দেখা যাবেও না। 15সেই সব পংগপাল সারা দেশটা এমনভাবে ঢেকে ফেলল যে, মাটির উপরটা কালো দেখাতে লাগল। মাঠে সবুজ সব কিছু আর গাছে যে সব ফল শিলাবৃষ্টি থেকে রক্ষা পেয়েছিল সেগুলো সব তারা খেয়ে ফেলল। সারা মিসর দেশের গাছপালাতে সবুজ বলতে কিছুই রইল না। 16তখন ফরৌণ তাড়াতাড়ি মোশি ও হারোণকে ডাকিয়ে এনে বললেন, “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু ও তোমাদের বিরুদ্ধে আমি পাপ করেছি। 17তাই দয়া করে তোমরা কেবল এবারের মত আমার পাপ ক্ষমা কর। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে মিনতি কর যেন তিনি আমার উপর থেকে এই মৃত্যুর ছায়া সরিয়ে নেন।”
18তখন মোশি ফরৌণের কাছ থেকে গিয়ে সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করলেন। 19তাতে সদাপ্রভু বাতাসের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন আর পশ্চিম দিক থেকে একটা জোর বাতাস এসে পংগপালগুলো উড়িয়ে নিয়ে লোহিত সাগরে ফেলল। সারা মিসর দেশে আর একটাও পংগপাল রইল না। 20কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের মন কঠিন করলেন; তিনি ইস্রায়েলীয়দের যেতে দিলেন না।
মিসরের উপর নবম আঘাত- অন্ধকার
21পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আকাশের দিকে তোমার হাত বাড়িয়ে দাও। তাতে হাত দিয়ে ছোঁয়ার মত অন্ধকারে দেশটা ডুবে যাবে।” 22তখন মোশি আকাশের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন, আর তাতে তিন দিন পর্যন্ত গাঢ় অন্ধকারে সারা মিসর দেশটা ডুবে রইল।
23ঐ তিন দিন পর্যন্ত কেউ কাউকে দেখতেও পেল না এবং ঘর ছেড়ে কেউ বাইরেও গেল না। কিন্তু ইস্রায়েলীয়েরা যেখানে ছিল সেখানে আলোর অভাব হল না। 24তখন ফরৌণ মোশিকে ডাকিয়ে এনে বললেন, “যাও, গিয়ে সদাপ্রভুর উপাসনা কর। তোমাদের ছেলেমেয়েরাও তোমাদের সংগে যেতে পারবে, কিন্তু তোমাদের গরু-ভেড়ার পাল এখানে থাকবে।”
25উত্তরে মোশি বললেন, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে পোড়ানো ও অন্যান্য উৎসর্গের পশু আপনাকেই যুগিয়ে দিতে হবে। 26আমাদের গরু-ভেড়াগুলোও আমাদের সংগে নিয়ে যেতে হবে। তাদের একটা খুরও আমরা এখানে ফেলে যেতে পারব না। আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপাসনার জন্য এগুলোর মধ্য থেকে কতগুলো আমাদের দরকারে লাগবে। সেখানে না যাওয়া পর্যন্ত আমরা বুঝতে পারছি না সদাপ্রভুর উপাসনার জন্য কোন্ কোন্ পশু আমাদের লাগবে।” 27সদাপ্রভু কিন্তু ফরৌণের মন কঠিন করলেন আর তাতে তাদের যেতে দিতে তিনি রাজী হলেন না।
28ফরৌণ মোশিকে বললেন, “আমার কাছ থেকে দূর হও। সাবধান! আর কখনও আমার সামনে এসো না। যেদিন তুমি আমার সামনে পড়বে সেই দিনই তোমার মরণ হবে।”
29মোশি বললেন, “আপনি যা বলছেন তা-ই হবে। আমার নিজের ইচ্ছায় আমি আর আপনার সামনে আসব না।”